ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতিত সুদমুক্ত অর্থনীতি সম্ভব নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সুদ ও ঘুষ সমাজে ভয়াবহ ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সাথেই সুদ জড়িয়ে থাকায় কোনভাবেই সুদমুক্ত অর্থনীতি চালু করা যায়নি। সুদব্যবস্থায় ধনী আরও ধনী হয়, অপর দিকে গরীব মানুষ শোষিত হয়ে আরও গরীব হয়। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে যাকাতভিত্তিক অর্থনীতির মাধ্যমে ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর হবে। সমাজ সুদ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমান হবে। মানুষের তৈরি মতবাদে বিগত ৫৪ বছর রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ায় সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বীন কায়েম করতে হবে। কোন ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গরূপে ঈমানের দাবি করা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় যখন সুদ জড়িত তখন মানুষ চাইলেই সুদমুক্ত হতে পারে না।

শুক্রবার (০২ মে) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গেন্ডারিয়া-ওয়ারী জোনের রুকন প্রার্থী ও অগ্রসর কর্মী শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, দ্বীনকে বিজয়ী করতে আল্লাহ তাঁর রাসূল (সা.) কে পাঠিয়েছেন। সব ফরজের বড় ফরজ দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা। ঈমানদারদের মাল ও জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহ কিনে নিয়েছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিনে নেওয়ার পর মাল ও জান দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আবার ঈমানদারদের কাছেই আমানত রেখেছেন।

পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পিছু হটা যায় না উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যার কারণে জামায়াতে ইসলামীর উপর যত জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী পিছু হটেনি। কৌশল পরিবর্তন করে ঈমানের দাবিতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে গেছে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ ১১ জন নেতৃবৃন্দকে ফ্যাসিবাদের জুলুমের শিকার হয়ে ফাঁসি বরণ করতে হয়েছে। তবুও ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করেনি। লাখ-লাখ নেতাকর্মী খুন, গুমের শিকার হয়েছে। হামলা-মামলায় জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। এতো কিছুর পরও যখন জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করা যায়নি তখন ফ্যাসিবাদী শক্তি জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে, প্রতীক কেড়ে নিয়েছে, সবশেষ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু যারা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে তাদের নিঃশেষ করা যায় না, যাবে না। জামায়াতে ইসলামী আদর্শ থেকে একচুলও পিছপা হয়নি, হবে না। সেজন্য জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা দাবিয়ে রাখা যায়নি, যাবে না।

মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত রুকন প্রার্থী ও অগ্রসর কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর কাছে নয়, শপথ আল্লাহর কাছে, আল্লাহর সাথে। শপথবদ্ধ হতে হবে ঈমানের পূর্ণ দাবি পূরণের জন্য। তিনি নৈতিকতা, আদর্শ, সততার সাথে জীবন গড়তে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ অনুসরণ করতে আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী, গেন্ডারিয়া-ওয়ারী জোন পরিচালক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক ডক্টর আব্দুল মান্নান।

মহানগরী মজলিসে শূরার সদস্য ও গেন্ডারিয়া-ওয়ারী জোনের সহকারী পরিচালক মাওলানা মীরবাহার আমিরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরে মহানগরীর কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা মোশাররফ হোসেন দারস পেশ করেন। অনুষ্ঠানে গেন্ডারিয়া-ওয়ারী জোনের থানা দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।